EUR/USD পেয়ারের 5-মিনিটের চার্টের বিশ্লেষণ
মঙ্গলবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে, যেমনটি আমরা পূর্বেই প্রত্যাশা করেছিলাম। দিনজুড়ে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বা গৌণ গুরুত্বসম্পন্ন সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি, তাই মার্কিন ডলারের সাম্প্রতিক দরপতনের কারণ হিসেবে কেবল সপ্তাহান্তে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোকেই দায়ী করা যায়।
মনে করে দেখুন যে, শুক্রবার ইসরায়েল ইরানের উপর মিসাইল হামলা চালিয়েছিল, যাতে অসংখ্য সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মার্কেটের ট্রেডাররা তখনই এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল। তবে শনিবার ইরান পাল্টা মিসাইল হামলা চালায় এবং সোমবার পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যেই গোলাবর্ষণ অব্যাহত ছিল।
সোমবার, ট্রেডারদের এই যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা সহ্য করতে হয়েছে। এখন এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, বাড়তি ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা আর মার্কিন ডলারকে সহায়তা দিচ্ছে না, বরং ডলার ফের প্রতিদ্বন্দ্বী মুদ্রাগুলোর বিপরীতে দুর্বল হয়ে পড়ছে। ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরে প্রস্তুত, তবে পারমাণবিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার ব্যাপারে তারা রাজি নয়—যেটি ওয়াশিংটনের মূল দাবি। এর ফলে সামরিক সংঘাত এখনো অব্যাহত রয়েছে, যা ডলারের মূল্যের আরেকটি বিয়ারিশ প্রবণতার কারণ হিসেবে কাজ করছে।
সোমবার দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল তৈরি হয়েছিল—দুটিই খুব ভালো মানের সিগন্যাল ছিল। ইউরোপীয় সেশনের শুরুতে এই পেয়ারের মূল্য 1.1534 লেভেল থেকে রিবাউন্ড করে এবং মার্কিন সেশনে নিকটবর্তী টার্গেট 1.1607 পর্যন্ত পৌঁছে যায় এবং এরপর সেখান থেকে বাউন্স করে। ফলে ট্রেডাররা সকালে লং পজিশন এবং বিকেলে শর্ট পজিশন ওপেন করার জন্য যথেষ্ট ভিত্তি পেয়েছিল। সেল সিগন্যালটি বাই সিগন্যালের মতো লাভজনক না হলেও, এটি থেকেও কয়েক ডজন পিপস মুনাফা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।
COT রিপোর্ট
সর্বশেষ COT রিপোর্টটি 10 জুন প্রকাশিত হয়েছে। উপরের চার্টে যেমনটি দেখা যাচ্ছে, নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নিট পজিশন দীর্ঘদিন ধরেই বুলিশ রয়েছে। 2024 সালের শেষদিকে বিক্রেতারা অল্প সময়ের জন্য সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল, তবে তারা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে ডলারের কেবল দরপতনই লক্ষ্য করা গেছে।
আমরা 100% নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না যে ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকবে, তবে বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি অনুযায়ী সম্ভবত তাই হবে।
আমরা এখনো ইউরোর ক্ষেত্রে মৌলিক প্রেক্ষাপট থেকে কোনো সহায়তা দেখতে পাচ্ছি না, তবে ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকার একটি শক্তিশালী কারণ এখনো বিদ্যমান। বৈশ্বিক পর্যায়ে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা এখনো অব্যাহত রয়েছে, কিন্তু এখন কে আর মূল্যের 16 বছরের ইতিহাস নিয়ে ভাবে? যদি ট্রাম্প বাণিজ্য যুদ্ধ শেষ করেন, তবে ডলারের দর আবারও বাড়তে পারে — কিন্তু তিনি আদৌ কি তা শেষ করবেন? আর করকে কবে শেষ করবেন?
লাল এবং নীল লাইন আবারও একে অপরকে ছেদ করেছে, যার মানে হলো মার্কেটে আবারও বুলিশ প্রবণতা তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ সাপ্তাহিক রিপোর্ট অনুযায়ী "নন-কমার্শিয়াল" গ্রুপের লং পজিশন 6,000 ইউনিট বেড়েছে, এবং শর্ট পজিশন 4,300 ইউনিট কমেছে। সুতরাং, সপ্তাহজুড়ে নিট পজিশনের সংখ্যা 10,300 ইউনিট বৃদ্ধি পেয়েছে।
EUR/USD পেয়ারের 1 ঘন্টার চার্টের বিশ্লেষণ
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এখনো স্থানীয় পর্যায়ে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে, যদিও মূল্য আগের সব সম্ভাব্য অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইনের ওপরে উঠে গেছে। গত চার মাস ধরে শুধুমাত্র ট্রাম্প-সম্পর্কিত ঘটনা, তার সিদ্ধান্ত এবং বাণিজ্য যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় মার্কেটে মুভমেন্ট সৃষ্টি হচ্ছে। এখন এই "চমৎকার ও ইতিবাচক মিশ্রণে" যোগ হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ। কোনো ভালো খবর নেই, শুধু নেতিবাচক খবরের ছড়াছড়ি—এ কারণেই দ্রুত গতিতে ডলারের দরপতন হচ্ছে, যা ট্রাম্পের জন্য অত্যন্ত লাভজনক।
17 জুন ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচ্য লেভেলগুলো হলো: 1.1092, 1.1147, 1.1185, 1.1234, 1.1274, 1.1362, 1.1426, 1.1534, 1.1615, 1.1666, 1.1704, 1.1750 পাশাপাশি সেনকৌ স্প্যান বি (1.1353) এবং কিজুন-সেন (1.1518) লাইন রয়েছে। মনে রাখবেন, ইচিমোকু ইন্ডিকেটরের লাইনগুলো দিনের বেলা অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে, তাই ট্রেডিং সিগন্যাল নির্ধারণের সময় এটি অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে। মনে রাখবেন, যখন মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকেই 15 পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করবে, তখন ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করতে হবে — এর ফলে ভুল সিগন্যালের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য লোকসান এড়ানো যাবে।
মঙ্গলবার ইউরোজোনে ZEW ইকোনমিক সেন্টিমেন্ট ইনডেক্স প্রকাশিত হবে, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রিটেইল সেলস এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাকশন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। যদিও মার্কিন প্রতিবেদনগুলো গুরুত্বপূর্ন বলে মনে হতে পারে, তবে আমরা মনে করি এই প্রতিবেদনগুলো এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টে বড় ধরনের কোনো প্রভাব ফেলবে না। বর্তমানে মার্কেট ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব দ্বারা পরিপূর্ণ রয়েছে, এবং ডলারের দর বৃদ্ধির সুযোগ খুবই সীমিত।
চিত্রের ব্যাখা:
- মূল্যের সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল – গাঢ় লাল লাইন; যেখানে মূল্যের মুভমেন্ট থেমে যেতে পারে। তবে এগুলো সরাসরি ট্রেডিং সিগন্যাল নয়।
- কিজুন সেন ও সেনকৌ স্প্যান বি লাইন – শক্তিশালী ইচিমোকু ইন্ডিকেটরের লাইন, যা ৪-ঘণ্টা চার্ট থেকে ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে স্থানান্তর করা হয়েছে।
- এক্সট্রিম লেভেল – হালকা লাল লাইন; যেখানে পূর্বে মূল্য রিবাউন্ড করেছে। এগুলো ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে।
- হলুদ লাইন – ট্রেন্ড লাইন, ট্রেন্ড চ্যানেল এবং অন্যান্য টেকনিক্যাল প্যাটার্ন নির্দেশ করে।
- COT ইন্ডিকেটর 1 – চার্টে প্রতিটি গ্রুপের ট্রেডারদের নিট পজিশনের পরিমাণ প্রদর্শন করে।