EUR/USD পেয়ারের 5-মিনিটের চার্টের বিশ্লেষণ
বুধবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের সামান্য নিম্নমুখী মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে, যা এখনো প্রাধান্য বিস্তারকারী মূল ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে। অন্যভাবে বলতে গেলে, আমরা এখনো একটি কারেকশনের পর্যবেক্ষণ করছি। গতকাল মার্কিন ডলারের আরও দর বৃদ্ধির জন্য তেমন কোনো যৌক্তিক ভিত্তি ছিল না, তবে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল। উল্লেখযোগ্য যে, বর্তমানে মূল্যের ঠিক নিচেই 1.1274 লেভেলে একটি গুরুত্বপূর্ণ সাপোর্ট এবং একটি অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন রয়েছে। সম্ভবত মূল্য এই নির্দিষ্ট টেকনিক্যাল লেভেলগুলোর দিকেই এগোচ্ছে। বর্তমান মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে, আমরা এই লেভেলগুলোর ব্রেক হওয়ার মতো কোনো শক্তিশালী কারণ দেখছি না।
অবশ্যই, এর মানে এই নয় যে এই ধরনের ব্রেকআউট অসম্ভব। মার্কেটের মুভমেন্ট সম্পর্কে কখনোই শতভাগ নিশ্চয়তার সঙ্গে পূর্বাভাস দেওয়া যায় না। কিন্তু এখন ডলারের আরও দর বৃদ্ধির জন্য কী কী কারণ থাকতে পারে? ট্রাম্পের ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ৯ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করার ঘোষণা? প্রত্যাশার চেয়ে সামান্য কম দুর্বল মার্কিন ডিউরেবল গুডস অর্ডার সংক্রান্ত প্রতিবেদন? আজ দেশটিতে প্রথম প্রান্তিকের জিডিপির দ্বিতীয় অনুমান প্রকাশিত হবে, তবে এতে কোনো উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক ফল আসবে বলে মনে হচ্ছে না।
তাই, আমরা হয় মার্কেটে একটি ফ্ল্যাট মুভমেন্ট বা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার আশা করছি। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মার্কেটের ট্রেডাররা দেখিয়েছে যে তাৎক্ষণিক কোনো মৌলিক বা অর্থনৈতিক কারণ ছাড়াও মার্কিন ডলার বিক্রি হয়ে যেতে পারে। বুধবার ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে মাত্র একটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়। ইউরোপীয় সেশনের সময়, মূল্য ক্রিটিক্যাল লাইনের কাছ থেকে রিবাউন্ড করে এবং প্রায় 1.1274 এর টার্গেট লেভেল পর্যন্ত নেমে আসে। সন্ধ্যার মধ্যে শর্ট পজিশন ম্যানুয়ালি ক্লোজ করা যুক্তিযুক্ত ছিল, কারণ তখন দরপতন সমাপ্তির সম্ভাবনা বেশি ছিল।
COT রিপোর্ট
সর্বশেষ COT রিপোর্ট ২০ মে প্রকাশিত হয়েছিল। উপরের চার্টে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে যে, নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নেট পজিশনের সংখ্যা দীর্ঘ সময় ধরে ঊর্ধ্বমুখী ছিল। ২০২৪ সালের শেষে কিছু সময়ের জন্য বিক্রেতারা মার্কেটে প্রাধান্য বিস্তার করেছিল, কিন্তু তারা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ডলারের মূল্য নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে। আমরা ১০০% নিশ্চিত হয়ে বলতে পারি না যে ডলারের দরপতন চলতেই থাকবে, তবে বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি সেই দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ইউরোর মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার পক্ষে কোনো মৌলিক কারণ নেই; তবে ডলারের দরপতন হওয়ার জন্য একটি বড় কারণ রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা এখনো বিদ্যমান, যদিও এই মুহূর্তে "প্রবণতা" শব্দের প্রভাবই বা কী? ট্রাম্প যদি বাণিজ্য যুদ্ধের যবনিকা টানেন, তবে ডলার আবারও শক্তিশালী হতে পারে, কিন্তু আদৌ কি তিনি তা করবেন?
লাল এবং নীল লাইনগুলো আবারও একে অপরকে অতিক্রম করেছে, যা মার্কেটে নতুন করে এই পেয়ারের মূল্যের বুলিশ প্রবণতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। সর্বশেষ সাপ্তাহিক রিপোর্ট অনুযায়ী, "নন-কমার্শিয়াল" ট্রেডারদের লং পজিশনের সংখ্যা 3,500 কমেছে, এবং শর্ট পজিশনের সংখ্যা 6,800 বেড়েছে। ফলস্বরূপ, নিট পজিশনের সংখ্যা 10,300 কমেছে। তবে, COT রিপোর্টগুলো এক সপ্তাহ পরে প্রকাশিত হয়। এখন আবারও মার্কেটের ট্রেডাররা সক্রিয়ভাবে এই পেয়ার ক্রয় করছে।
EUR/USD পেয়ারের 1 ঘন্টার চার্টের বিশ্লেষণ
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে স্থানীয় পর্যায়ে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের একটি নতুন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিদ্যমান রয়েছে, যা গত চার মাস ধরে চলমান বুলিশ প্রবণতার অংশ। মার্কিন ডলারের মূল্যের ভবিষ্যৎ মুভমেন্ট এখনো বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধ-সম্পর্কিত পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে। যদি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এবং শুল্ক হ্রাস করা হয়, তাহলে ডলারের পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এমন কোনো চুক্তি স্বাক্ষরিত হচ্ছে না। ট্রাম্প এখনো এমনসব অদ্ভুত সিদ্ধান্ত ও বিস্ময়কর বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন, যার ফলে মার্কেটের ট্রেডাররা ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছে এবং তাঁর ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করে মূল্যের কনসোলিডেশল না হলে এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সমাপ্তি হয়েছে বলে গণ্য করা যাবে না।
২৯ মে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেডিং লেভেলগুলো হলো: 1.0823, 1.0886, 1.0949, 1.1006, 1.1092, 1.1147, 1.1185, 1.1234, 1.1274, 1.1362, 1.1426, 1.1534 এবং 1.1607; সেইসাথে সেনকৌ স্প্যান বি (1.1214) এবং কিজুন-সেন (1.1338) লাইন রয়েছে। মনে রাখতে হবে, ইচিমোকু সূচকের লাইনগুলোর অবস্থান দিনব্যাপী পরিবর্তিত হতে পারে, তাই ট্রেডিং সিগন্যাল নির্ধারণের সময় তা বিবেচনায় নেওয়া উচিত। মূল্য সঠিক দিকে ১৫ পিপস অগ্রসর হলে ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করতে ভুলবেন না — এটি ভুল সিগন্যালের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ক্ষতি থেকে সুরক্ষা প্রদান করে।
বৃহস্পতিবার ইউরোজোনে কোনো উল্লেখযোগ্য ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম প্রান্তিকের জিডিপির দ্বিতীয় অনুমান প্রকাশিত হবে। এই অনুমান সাধারণত কম গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয়, তাই আমরা মার্কেটে কোনো শক্তিশালী প্রতিক্রিয়ার প্রত্যাশা করছি না — বিশেষ করে যখন ট্রেডাররা এই প্রতিবেদনের প্রথম অনুমানকেও উপেক্ষা করেছে।
চিত্রের ব্যাখা:
- মূল্যের সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল – গাঢ় লাল লাইন; যেখানে মূল্যের মুভমেন্ট থেমে যেতে পারে। তবে এগুলো সরাসরি ট্রেডিং সিগন্যাল নয়।
- কিজুন সেন ও সেনকৌ স্প্যান বি লাইন – শক্তিশালী ইচিমোকু ইন্ডিকেটরের লাইন, যা ৪-ঘণ্টা চার্ট থেকে ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে স্থানান্তর করা হয়েছে।
- এক্সট্রিম লেভেল – হালকা লাল লাইন; যেখানে পূর্বে মূল্য রিবাউন্ড করেছে। এগুলো ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে।
- হলুদ লাইন – ট্রেন্ড লাইন, ট্রেন্ড চ্যানেল এবং অন্যান্য টেকনিক্যাল প্যাটার্ন নির্দেশ করে।
- COT ইন্ডিকেটর 1 – চার্টে প্রতিটি গ্রুপের ট্রেডারদের নিট পজিশনের পরিমাণ প্রদর্শন করে।