বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার EUR/USD পেয়ারের মূল্যের উল্লেখযোগ্য কোনো মুভমেন্ট দেখা যায়নি এবং সপ্তাহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন হওয়া সত্ত্বেও স্বল্প মাত্রার অস্থিরতার মধ্যেই এই পেয়ারের মূল্য স্থবির ছিল। এদিন জার্মানি, ইউরোজোন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিষেবা ও উৎপাদন খাতের ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সূচক (PMI) প্রকাশিত হয়; তবে সেগুলোর ফলাফল উল্লেখযোগ্য ছিল না, তাই এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট বা সামগ্রিক প্রবণতায় এর কোনো প্রভাব পড়েনি। ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ইসিবি) বৈঠকও ট্রেডারদের মনোভাবে তেমন কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি, কারণ ইসিবি কোনো উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত নেয়নি এবং বৈঠক-পরবর্তী চূড়ান্ত বিবৃতিতেও কোনো তাৎপর্যপূর্ণ বা মার্কেটে ব্যাপক মুভমেন্ট সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো বক্তব্য ছিল না।
টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকে, এই পেয়ারের মূল্য রাতভর অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইনটির নিচে কনসোলিডেশন করে। তবে আমরা মনে করি, এই পরিস্থিতিকে সতর্কতার সঙ্গে মূল্যায়ন করা উচিত। গতকাল এই পেয়ারের মূল্য কার্যত একটি ফ্ল্যাট রেঞ্জে ছিল। এবং যখন মূল্য রেঞ্জের ভেতর থাকে, তখন সিগনালগুলো অনেক সময় ভুল বলে প্রমাণিত হয়। এই মুহূর্তে আমরা এটি বলতে পারছি না যে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শেষ হয়ে গেছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5 মিনিটের টাইমফ্রেমে, বৃহস্পতিবার মাত্র একটি ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়। ইউরোপীয় সেশনের শুরুতেই—যখন ইসিবি বৈঠকের ফলাফল প্রকাশ করা হচ্ছিল—এই পেয়ারের মূল্য 1.1740–1.1745 এরিয়া থেকে কিছুটা উপরে বাউন্স করে, যদিও সেটি খুব একটা নির্ভুল বাউন্স ছিল না। আমরা এই সিগনালকে সঠিক মনে করি না, কারণ এটি ইসিবির বৈঠকের ফলাফল ঘোষণার সময় গঠিত হয়েছিল—যে সময় হঠাৎ ও আবেগতাড়িতভাবে মুভমেন্টের দিক পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের তিন সপ্তাহব্যাপী কারেকশন সম্ভবত শেষ হয়েছে। যেহেতু সম্প্রতি ট্রাম্পের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি এবং পাওয়েলের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ও বাণিজ্য যুদ্ধ আরও তীব্র হয়েছে, তাই মাঝারি মেয়াদে ডলারের দর বৃদ্ধি পাওয়ার কোনো কারণ এখনো দেখা যাচ্ছে না। এই মুহূর্তে আমরা এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সমাপ্তির ঘটেছে বলে মনে করছি না।
শুক্রবার, পুনরায় EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শুরু হতে পারে, এবং আমরা নতুন ট্রেডারদের পরামর্শ দেব 1.1740–1.1745 এরিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে। আজকের সেশনেও এই পেয়ারের মূল্য ফ্ল্যাট রেঞ্জে থাকতে পারে, কারণ আজও খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নেই এবং সাম্প্রতিক সময়ে মার্কেটে উল্লেখযোগ্য অস্থিরতা দেখা যায়নি। তবুও, 1.1740–1.1745 এর আশপাশে বাই ও সেল—দুই ধরনের ট্রেড সিগনাল গঠিত হতে পারে।
5 মিনিট টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1563–1.1571, 1.1655–1.1666, 1.1740–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908।
শুক্রবার ইউরোজোনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আজ ডিউরেবল গুডস বা টেকসই পণ্যের অর্ডার সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।