বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার বেশ স্বল্প মাত্রার অস্থিরতার (প্রায় 50 পিপস) মধ্যে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য একটি ফ্ল্যাট রেঞ্জে অবস্থান করেছে। বুধবার সন্ধ্যায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিবৃতির কারণে শুরু হওয়া অস্থিরতার পর মার্কেটে দ্রুত স্থিতিশীল হয়ে ওঠে এবং এই পেয়ারের মূল্য পূর্ববর্তী লেভেলে ফিরে যায়। লক্ষ্য করার মতো বিষয় হচ্ছে, ডলার দুইবার 1.1563 লেভেলের নিচে কনসোলিডেট করতে ব্যর্থ হয়েছে, যা এই ইঙ্গিত হতে পারে যে বর্তমান নিম্নমুখী প্রবণতা শেষের পথে রয়েছে।
আমরা মনে করি, গত তিন সপ্তাহ ধরে EUR/USD-এর চলমান মুভমেন্ট একটি নিখাদ টেকনিক্যাল কারেকশন ছিল। এই সময়ে অনেক খবর এসেছে এবং ইভেন্টও ছিল যা মার্কিন ডলারের দর বৃদ্ধি পাওয়ার পক্ষে যুক্তিযুক্ত ছিল না। ট্রেডাররা বেশ কয়েকটা সামষ্টিক প্রতিবেদন উপেক্ষা করেছে বা আংশিকভাবে বিশ্লেষণ করেছে। টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকে, এটি একটি স্বাভাবিক কারেকশন, যা ট্রেন্ডলাইনের উপরে কনসোলিডেশনের মাধ্যমে শেষ হবে। মৌলিক দৃষ্টিকোণ থেকে, এই দরপতন আদৌ ঘটার কথা ছিল না, তবে অনন্তকাল ধরে ডলারের দরপতন চলতে পারে না।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে, বৃহস্পতিবার দুটি বাই সিগনাল গঠিত হয়েছিল। এই পেয়ারের মূল্য 1.1563–1.1571-এর সাপোর্ট এরিয়া থেকে দুইবার রিবাউন্ড করে এবং শেষ পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শুরু হয়। নতুন ট্রেডাররা সন্ধ্যার দিকে ম্যানুয়ালি লং পজিশন ক্লোজ করে মাঝারি মানের লাভ করতে পারতেন। তবে যেহেতু মূল্য দুইবার 1.1563–1.1571 জোন ব্রেক করে নিচের দিকে ব্যর্থ হয়েছে, আমরা এই পেয়ারের মূল্যের একটি শক্তিশালী মুভমেন্টের প্রত্যাশা করতে পারি, অন্তত ট্রেন্ডলাইনের দিকে।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের কারেকশন অব্যাহত রয়েছে, তবে গত ছয় মাসব্যাপী চলমান ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনো অটুট রয়েছে। আমরা মনে করি না যে ডলারের দরপতন শেষ হয়েছে। মার্কিন কারেন্সি গত ছয় মাস ধরে দরপতনের শিকার হচ্ছে এবং বর্তমানে ডলারের মূল্যের স্বল্পমেয়াদি কারেকশন হচ্ছে, যা কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে। ট্রাম্পের অবস্থান নাটকীয়ভাবে বদলায়নি, তাই এখনই মধ্যমেয়াদে ডলারের দর বৃদ্ধির প্রত্যাশা করার কোনো কারণ নেই।
শুক্রবার EUR/USD পেয়ারের মূল্য ট্রেন্ডলাইনের দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে, কারণ মূল্য দুইবার 1.1563 লেভেল ব্রেক করে নিচের দিকে যেতে ব্যর্থ হয়েছে। ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করে এই পেয়ারের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হলে সেটি নিম্নমুখী প্রবণতার সমাপ্তি সংকেত দেবে।
5-মিনিট টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচ্য লেভেলগুলো হলো: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1563–1.1571, 1.1655–1.1666, 1.1740–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908।
শুক্রবার ইউরোজোনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। যুক্তরাষ্ট্রে একমাত্র প্রকাশিতব্য উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন হল মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভোক্তা মনোভাব সূচক।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।