সোমবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
সোমবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের বেশ শক্তিশালী মুভমেন্ট দেখা গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে মার্কেটে অস্থিরতার মাত্রা খুব বেশি ছিল না, যদিও রাতেই আসা খবর মার্কেটকে "ওড়াতে" পারত। তবে সবচেয়ে সক্রিয় ট্রেডিং সেশনে—মার্কিন সেশনে সবচেয়ে শক্তিশালী মুভমেন্ট দেখা গিয়েছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা বৃদ্ধি সত্ত্বেও ডলার কোনো সুবিধা নিতে পারেনি। আমরা আগেই সতর্ক করেছিলাম যে এখন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে, এবং গতকালই কাতার, ইসরায়েল এবং অন্যান্য পারস্য উপসাগরীয় দেশ—যেখানে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে—সেখানে ইরানের হামলার খবর প্রকাশিত হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে, ২০২৫ সালে ডলারকে আর কেউই "নিরাপদ কারেন্সি" হিসেবে দেখছে না—এবং এখন এটি নিশ্চিতভাবে সেই মর্যাদা হারিয়েছে। এর ফলে, EUR/USD পেয়ারের মূল্য দ্রুত, সহজে এবং প্রায় বাধাহীনভাবে চলতি বছরের সর্বোচ্চ লেভেলে ফিরে এসেছে। সবকিছু ইঙ্গিত করছে যে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকবে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
সোমবার 5-মিনিট টাইমফ্রেমে অনেকগুলো কার্যকর ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে। দিনের প্রথমভাগে এই পেয়ারের মূল্য মূলত কমেছে এবং 1.1474–1.1481 জোনে একাধিক ওভারল্যাপিং সেল সিগন্যাল গঠিত হয়েছে। এই সিগন্যালগুলোর ভিত্তিতে একটি শর্ট পজিশন ওপেন করা যেত, কিন্তু এই ট্রেড থেকে লোকসান হয়েছে।
তবে এরপর একটি শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছে। একই জোনে বাই সিগন্যাল গঠিত হয়েছে এবং এরপর থেকেই এই পেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পেতে থাকে, একই সঙ্গে নতুন নতুন বাই সিগন্যালও গঠিত হয়েছে। ফলে যারা মার্কিন সেশনে লং পজিশন ওপেন করেছেন তারা কমপক্ষে 80–90 পিপস আয় করতে পেরেছেন।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে, যা ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বায়িত্ব নেয়ার পর থেকে শুরু হয়েছে এবং সম্ভবত পরবর্তী প্রেসিডেন্ট না আসা পর্যন্ত এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত। মূলত, ট্রাম্প এখনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট—এই একটি তথ্যই ডলারের দরপতনের জন্য যথেষ্ট। এমনকি ইরান–ইসরায়েল সংঘাতের বাড়তি উত্তেজনাও ডলারের মূল্যের উপর খুব বেশি প্রভাব ফেলেনি, কারণ যুক্তরাষ্ট্র এখন এই সংঘাতে সরাসরি জড়িয়ে পড়েছে। ট্রেডাররা এখনও ডলার কেনার ব্যাপারে অনিচ্ছুক, যদিও প্রতিদিন তারা ডলার বিক্রি করছে না।
মঙ্গলবার EUR/USD পেয়ারের মূল্য আরও ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে, কারণ ডিসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন ইতোমধ্যেই ব্রেক করা হয়েছে এবং ডলারের পক্ষে থাকা ইতিবাচক সব কারণ মার্কেটে মূল্যায়িত হয়ে গেছে।
5-মিনিট টাইমফ্রেমে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণযোগ্য লেভেলগুলো হচ্ছে: 1.1132–1.1140, 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413–1.1424, 1.1474–1.1481, 1.1527, 1.1561–1.1571, 1.1609, 1.1666, 1.1704, 1.1802।
মঙ্গলবারের গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টগুলোর মধ্যে ইসিবির প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্দ এবং ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের বক্তব্য রয়েছে। যদিও আমরা তাদের কাছ থেকে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বা নতুন তথ্যের প্রত্যাশা করছি না, তবুও এমন ইভেন্ট উপেক্ষা করা যাবে না। তবে এখনো মধ্যপ্রাচ্য সংঘাতই মার্কেটের মূল অনুঘটক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।