শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার পুরো দিনজুড়েই তুলনামূলক স্থিতিশীলভাবে GBP/USD পেয়ারের ট্রেডিং পরিলক্ষিত হয়েছে। সেদিন কোনো গুরুত্বপূর্ণ খবর বা ইভেন্ট ছিল না, ফলে এই পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতার মাত্রা ছিল মাত্র ৬৫ পিপস। এই পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করেছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে নতুন সপ্তাহেও নিম্নমুখী কারেকশন অব্যাহত থাকতে পারে। তবে, আমরা মনে করিয়ে দিচ্ছি যে বৈশ্বিক বাণিজ্য সংঘাত পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। ট্রাম্পের শুল্ক এখনো বলবৎ রয়েছে, ফলে বাণিজ্য দ্বন্দ্ব প্রশমনের কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তদুপরি, বাণিজ্য চুক্তি বা আলোচনার কোনো তথ্যও পাওয়া যাচ্ছে না। ডোনাল্ড ট্রাম্প গণমাধ্যমে বারবার আশ্বস্ত করছেন যে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর হবে, কিন্তু এ নিয়ে বাস্তবিক অর্থে কোনো তথ্য নেই। এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা নিয়েও এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই যে তা সফলভাবে শেষ হবে কিংবা ৯ জুলাইয়ের আগেই শেষ হবে। এই প্রেক্ষাপটে, আপাতত শুধুমাত্র একটি কারেকশনের অংশ হিসেবে মার্কিন ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে শুক্রবার মাত্র একটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয় এবং সারাদিনজুড়ে এই পেয়ারের মূল্যের সাইডওয়েজ মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। কেবল মার্কিন ট্রেডিং সেশনে এই পেয়ারের মূল্য 1.3443 লেভেল থেকে অল্প পরিমাণে রিবাউন্ড করেছিল, তবে এই রিবাউন্ডের ফলে উল্লেখযোগ্য কোনো ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট সৃষ্টি হয়নি। তবুও, মূল্য ২০ পিপস পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছিল, যার অর্থ, এই ট্রেডটি লোকসানে ক্লোজ হতো না।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এখন শুধুমাত্র ট্রাম্পের গৃহীত পদক্ষেপ দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে এবং তার নীতিমালার প্রতি ট্রেডাররা যথেষ্ট সন্দিহান মনোভাব বজায় রেখেছে। বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমনের কিছুটা ইঙ্গিত দেখা গেলেও, মার্কেটে এই নিয়ে কোনো আশাবাদী মনোভাব গড়ে ওঠেনি। গত সপ্তাহে ডলারের দর সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে এটি নিছকও একটি টেকনিক্যাল কারেকশন যা আরও কিছুটা সময় অব্যাহত থাকতে পারে। ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করলেও এটিকে পূর্ণাঙ্গভাবে ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বলা যাবে না।
ট্রেন্ডলাইন ব্রেক হওয়ায় সোমবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট আবার শুরু হতে পারে। তবে, এমন মুভমেন্টকে সমর্থন করার মতো মৌলিক কারণ খুবই সীমিত। আমরা এখনো মার্কিন ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার ব্যাপারে নিশ্চিত নই, তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে টেকনিক্যাল কারণগুলোর উপর ভিত্তি করেই ট্রেড করা উচিত হবে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বিবেচ্য লেভেলগুলো হলো: 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3421–1.3443, 1.3537, 1.3580–1.3592, 1.3652–1.3660, 1.3695।
সোমবার যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন খাতের ব্যবসায়িক কার্যক্রম সূচক প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে। আমাদের বিশ্বাস, কেবল যুক্তরাষ্ট্রের ISM সূচকই মার্কেটে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, তবে এটি সামগ্রিক টেকনিক্যাল দৃশ্যপটের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে না বলে মনে হচ্ছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।