সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ:
বুধবার খুব কম সংখ্যক সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে বলে নির্ধারিত রয়েছে। তবে যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন ট্রেডাররা জন্য গুরুত্বপূর্ণ—বা বলা ভালো, এক সময় গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা দেখতে পাচ্ছি, ট্রেডাররা এখনো সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন ও মৌলিক প্রেক্ষাপট উপেক্ষা করে প্রতিটি সুযোগেই মার্কিন ডলার বিক্রি করছে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান অনুযায়ী, এপ্রিল মাসে যুক্তরাজ্যের ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) 3.3%-এ পৌঁছাতে পারে, যা নিঃসন্দেহে ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যের বুলিশ প্রবণতা সৃষ্টি করতে পারে, কারণ এই মাত্রায় মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির পেলে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড দীর্ঘ সময়ের জন্য মুদ্রানীতি নমনীয় করা থেকে বিরত থাকতে পারে। তবে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, এই কারণ ছাড়াও সোমবার এবং বুধবার পাউন্ডের মূল্য শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা প্রদর্শন করেছে।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
বুধবারের ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ফেডারেল রিজার্ভের প্রতিনিধি থমাস বারকিন এবং ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিনিধি ফিলিপ লেইনের বক্তব্য অনুষ্ঠিত হবে। তবে, এই বক্তব্যগুলোর প্রভাব কতটা বেশি হবে, যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর বর্তমান নীতিগত অবস্থান বেশ স্পষ্ট এবং ট্রেডাররা এখন কেবলমাত্র একটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করছে?
আমাদের বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, ট্রেডারদের একমাত্র মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ। যদিও এটি ধীরে ধীরে প্রশমিত হচ্ছে, তবুও এখনো তা পুরোপুরি শেষ হয়নি। ডোনাল্ড ট্রাম্প একের পর এক বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা দিচ্ছেন, তবে এসব খবর বাস্তবিক অর্থে মার্কিন ডলারকে খুব একটা সমর্থন দিতে পারছে না। যদি ট্রাম্প নতুন করে শুল্ক আরোপ শুরু করেন, বিদ্যমান শুল্ক বৃদ্ধি করেন, বা অধিকাংশ দেশের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হন, তাহলে নতুন করে ডলারের দরপতন শুরু হতে পারে। এমনকি নতুন কোনো শুল্ক আরোপ ছাড়াও ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকতে পারে, কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং তার নীতিমালার প্রতি ট্রেডাররা এখনো অত্যন্ত নেতিবাচক মনোভাবপোষণ করছে।
উপসংহার:
নতুন সপ্তাহের তৃতীয় দিনের ট্রেডিংয়ে উভয় কারেন্সি পেয়ারের মূল্যই যেকোনো দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো দুর্বল, এবং ট্রাম্প কখন আবার কোনো উচ্চপ্রভাবশালী বিবৃতি দেবেন সেই পূর্বাভাস দেওয়া অসম্ভব। আমাদের মতে, আজ মার্কেটে সম্ভাব্যভাবে ফ্ল্যাট মুভমেন্টই দেখা যাবে। তবে এই সপ্তাহে ইতোমধ্যে দেখা গেছে যে দৃঢ় কারণ বা যৌক্তিকতা ছাড়াও ট্রেডাররা EUR/USD ও GBP/USD উভয় পেয়ারই ক্রয় করে যাচ্ছে। তাই উভয় কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের আরও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।