মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
মঙ্গলবার মূলত EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের সাইডওয়েজ ট্রেডিং পরিলক্ষিত হয়েছে, তবে বুধবার সকালের শুরুতেই আবার ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শুরু হয়েছে। এটি নির্দেশ করে যে চলমান ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা, যা এখন চার মাস ধরে অব্যাহত রয়েছে এবং এটি শুধুমাত্র ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন বাণিজ্যনীতির কারণে হচ্ছে। মার্কেটের ট্রেডাররা এক মাসের জন্য ডলারের কারেকশন ঘটানোর ক্ষেত্রে কিছুটা বিরতি নিয়েছিল এবং এখন মনে হচ্ছে ট্রেডাররা আবার নতুন করে মার্কিন মুদ্রা বিক্রির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সোমবার ডলার বিক্রির পেছনে যে কারণগুলো ছিল, তা ছিল তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী কারণ নয়। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, এমন অজুহাত প্রতিদিনই খুঁজে পাওয়া যায়। মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো যেকোনো তথ্যের ভিত্তিতে মার্কিন ডলার বিক্রি করছে, কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্টের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে ট্রেডাররা ডলারের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করছে। বাস্তবিক অর্থে, এটাই ট্রাম্পের লক্ষ্য—তিনি শক্তিশালী ডলার চান না। মার্কিন ডলার গত ১৬ বছর ধরে অন্যান্য মুদ্রার বিপরীতে শক্তিশালী হচ্ছিল। মঙ্গলবার ও বুধবার ডলার বিক্রির জন্য প্রকৃতপক্ষে কোনো কারণ ছিল না।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
মঙ্গলবার 5-মিনিট টাইমফ্রেমে 1.1275–1.1292 জোনের কাছাকাছি একটি কার্যকর ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়। ওই জোন থেকে রিবাউন্ড করে মূল্য প্রায় 40 পিপস হ্রাস পায়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, পেয়ারটির মূল্য নিকটতম টার্গেট লেভেল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি, তাই এই ট্রেড থেকে লাভ করতে হলে সেটি ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হতো। রাতে মূল্য আবার 1.1275–1.1292 এরিয়ার ওপরে কনসোলিডেট করে। যারা এশিয়ান সেশনে ট্রেড করেছেন, তারা লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ পেয়েছেন।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
1-ঘণ্টার টাইমফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্য একটি ডিসেন্ডিং চ্যানেল ব্রেক করে উপরের দিকে গিয়েছে এবং কোনো সুস্পষ্ট কারণ ছাড়াই ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। মনে হচ্ছে, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে যে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছিল, সেটিই এখনো অব্যাহত আছে। এবার নতুন কোনো শুল্ক, নিষেধাজ্ঞা বা বড় ঘোষণা দরকার হয়নি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের উপস্থিতিই ট্রেডারদের জন্য ডলার বিক্রির করার জন্য যথেষ্ট।
বুধবার আবারও মূলত টেকনিক্যাল বিষয়গুলোর ভিত্তিতে EUR/USD পেয়ারের ট্রেডিং করা হবে। এখনো পর্যন্ত মৌলিক প্রেক্ষাপট এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টে কোনো ভূমিকা রাখছে না, এবং এখন মার্কেটের ট্রেডাররা আবারও যেকোনো কারণেই অথবা কোনো কারণ ছাড়াই—ডলার বিক্রি করতে প্রস্তুত।
৫-মিনিটের চার্টে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হল: 1.0940-1.0952, 1.1011, 1.1088, 1.1132-1.1140, 1.1198, 1.1275-1.1292, 1.1413-1.1424, 1.1474-1.1481, 1.1513, 1.1548, 1.1571, 1.1607-1.1622।
বুধবার ইউরোজোন বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। দৈনিক ট্রেডিংয়ে এই পেয়ারের মূল্যের ফ্ল্যাট মুভমেন্টের সম্ভাবনা রয়েছে, তবে বর্তমানে মূল্যের মুভমেন্ট দেখে মনে হচ্ছে, মার্কেটে ডলার বিক্রির নতুন প্রবণতা শুরু হয়েছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।