সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ:
মঙ্গলবার কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না, তাই আজ মৌলিক প্রেক্ষাপট উভয় কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টে কোনো প্রভাব ফেলবে না। তবে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনের ফলাফল খুব কমই কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের উপর প্রভাব ফেলেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ট্রেডাররা ডলারের পক্ষে থাকা যেকোনো ইতিবাচক ফলাফল উপেক্ষা করেছে এবং ডলারের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রতিবেদনগুলোর প্রতিই বেশি প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করেছে। টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকে, তিন মাসব্যাপী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার বিপরীতে ইউরোর মূল্য এখনও নিম্নমুখী কারেকশনের মধ্যে রয়েছে, এবং পাউন্ডের মূল্য একটি সাইডওয়েজ রেঞ্জেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করছে।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
মঙ্গলবারের ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ফেডারেল রিজার্ভের বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি বক্তব্য দেবেন যার মধ্যে রয়েছেন: বারকিন, বস্টিক, কলিন্স, মুসালেম, কুগলার, ডেইলি এবং হ্যাম্যাক। ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) থেকে ডনারি, চিপোলোনে এবং বুখ বক্তব্য দেবেন। ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের প্রধান অর্থনীতিবিদ হিউ পিলের বক্তব্যও ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে, এসব বক্তব্য শুনে লাভ কী, যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি এবং দিকনির্দেশনা আগে থেকেই পুরোপুরি স্পষ্ট?
আমাদের মতে, বর্তমানে মার্কেটের ট্রেডারদের কাছে একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বাণিজ্যযুদ্ধ, যা ধীরে ধীরে প্রশমিত হলেও এখনও পুরোপুরিভাবে এর প্রভাব শেষ হয়নি। ডোনাল্ড ট্রাম্প একের পর এক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু এই প্রতিবেদনগুলো ডলারের উপর খুব সামান্যই প্রভাব ফেলছে। যদি ট্রাম্প নতুন করে শুল্ক আরোপ করেন, বিদ্যমান শুল্ক বৃদ্ধি করেন বা যদি অধিকাংশ দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি কার্যকর না হয়, তাহলে ডলারের দরপতনের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। এমনকি নতুন কোনো শুল্ক ছাড়াও পুনরায় ডলারের দরপতন শুরু হতে পারে, কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং তার গৃহীত নীতিমালার প্রতি ট্রেডাররা এখনও অত্যন্ত নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করছে।
উপসংহার:
নতুন সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনের ট্রেডিংয়ে উভয় কারেন্সি পেয়ারের মূল্যই যেকোনো দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে। আজ মৌলিক প্রেক্ষাপটের তেমন কোনো প্রভাব থাকবে না এবং কখন ট্রাম্প নতুন করে প্রভাবশালী বিবৃতি দেবেন সেই পূর্বাভাস দেওয়া অসম্ভব। আমাদের অনুমান, আজ মার্কেটে ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতার মাত্রা কম থাকবে এবং মুভমেন্টও সীমিত হবে। ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য সাইডওয়েজ রেঞ্জের মধ্যে নিম্নমুখী হতে পারে, এবং এক মাসব্যাপী পরিলক্ষিত নিম্নমুখী প্রবণতার মধ্যেই ইউরোর মূল্য়ের কারেকটিভ মুভমেন্ট চলমান থাকতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।